rupkatha-png
গ্লেন কানিংহাম: আগুনে পুড়েও বিশ্বের দ্রুততম দৌড়বিদ

শৈশবের ট্র্যাজেডি

গ্লেন কানিংহামের জন্ম ১৯০৯ সালে আমেরিকার ক্যানসাসে। মাত্র ৮ বছর বয়সে এক ভয়াবহ স্কুল দুর্ঘটনা তার জীবন বদলে দেয়। স্কুলে জ্বালানি তেলের বিস্ফোরণে আগুন লেগে যায়, গ্লেনের শরীরের নিচের অংশ প্রায় পুড়ে যায়। তাকে মৃত মনে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তাররা তার মাকে বলেন,

 

"আপনার ছেলে বাঁচবে না। যদি কোনোভাবে বাঁচেও, সে কখনো হাঁটতে পারবে না।"

 

মৃত্যুর সাথে লড়াই

গ্লেনের পা-এতটাই পুড়ে গিয়েছিল যে ডাক্তাররা অ্যাম্পিউটেশনের কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলেন। ২ বছর শয্যাশায়ী থাকার পর, তিনি প্রথমবারের মতো পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। প্রচণ্ড ব্যথা সহ্য করে, তিনি আস্তে আস্তে হাঁটতে শুরু করেন।

 

দৌড়ের প্রতি প্রেম

গ্লেনের লক্ষ্য ছিল শুধু হাঁটতে পারাই নয়—তিনি দৌড়াতে চেয়েছিলেন! প্রতিদিন তিনি স্কুলে হেঁটে যেতেন, তারপর দৌড়ানোর চেষ্টা করতেন। প্রথমে লোকেরা তাকে নিয়ে হাসত, কিন্তু গ্লেন কখনো থামেনি। কলেজে ভর্তি হয়ে তিনি ট্র্যাক টিমে যোগ দেন।

 

বিশ্ব রেকর্ড গড়ার মুহূর্ত

১৯৩৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে গ্লেন কানিংহাম ১ মাইল দৌড়ে বিশ্বের দ্রুততম সময় (৪:০৬.৮ মিনিট) করে ইতিহাস গড়েন। সেই ছেলে, যাকে ডাক্তাররা আজীবন পঙ্গু ভেবেছিলেন, সে "World’s Fastest Miler" খেতাব পেল!

 

লেগাসি

তিনি ১৯৩৬ বার্লিন অলিম্পিকে আমেরিকার হয়ে সিলভার মেডেল জিতেন।

 

১৯৮৮ সালে তার নামে "গ্লেন কানিংহাম স্টেডিয়াম" তৈরি হয়।

 

তিনি শুধু একজন অ্যাথলিট নন, একটি প্রতীক—যে কোনো পরিস্থিতিতে হার না মানার।

 

"আমার পা পুড়ে গিয়েছিল, কিন্তু আমার স্বপ্ন কখনো পুড়েনি।"

— গ্লেন কানিংহাম

 

গ্লেন কানিংহাম থেকে শেখা ৩টি জীবনবোধ:

দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি – শারীরিক অক্ষমতাকে মানসিক শক্তিতে পরিণত করতে হবে

 

সিঁড়ি ভেঙে সাফল্য পাওয়া – প্রথমে হাঁটা, তারপর দৌড়ানো। ধাপে ধাপে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে

 

কখনো হাল ছাড়বেন না – লোকের কথা উপেক্ষা করুন, নিজের বিশ্বাসে অটল থাকতে হবে 

 

📌 এই গল্প আপনাকে কী শিখাল? নিচে কমেন্ট করুন! 👇